বাচ্চার জন্য ৭ টি নরম খাবারের রেসিপি

সাধারণত বাচ্চার ৬ মাস বয়সের পর থেকে ডাক্তার টা বাড়তি খাবারের পরামর্শ দিয়ে থাকেন। এসময় শিশুর স্বাস্থ্যকর বিকাশের জন্য পুষ্টিকর এবং সেই সাথে সহজপাচ্য খাবার খুবই গুরুত্বপূর্ণ। পুষ্টিসমৃদ্ধ খাবার শিশুদের হজমে সহায়ক এবং এটি শিশুর শারীরিক বৃদ্ধি ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা উন্নত করতে সাহায্য করে। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই মায়েরা সবসময় বাড়তি একটা চিন্তায় থাকেন যে বাচ্চার জন্য কোণ খাবার গুলো ভালো হবে। একটা বিষয় খেয়াল রাখতে হবে যে , শিশুকে সবসময় নরম খাবার খাওয়ানোর চেষ্টা করবেন যাতে তারা এটি সহজে খেতে ও হজম করতে পারে। আজকের এই লেখার মাধ্যমে আমি আপনাদের বাচ্চার জন্য সহজ ও নরম ৭ টি চমৎকার রেসিপি সম্পর্কে জানাবো। আশা করছি এরপর থেকে বাচ্চাকে কি খাওয়াবেন সেটি নিয়ে আর বাড়তি টেনশনের কারন থাকবে না। ৭ টি নরম খাবারের রেসিপি মিক্সড সবজি খিচুড়ি উপকরণ প্রস্তুতপ্রনালী প্রথমে চাল ও ডাল ভালো করে ধুয়ে নিতে হবে। এরপর এতে ছোট ছোট করে কেটে রাখা সবজি ও পানি মিশিয়ে খুব ভালো করে রান্না করে নিতে হবে। রান্না শেষে একটি চামচের সাহায্য খিচুড়ি গুলোকে মিহি করে নিতে হবে। এতে করে বাচ্চার খাবার টি খেতে সুবিধা হবে। উপকারিতা এই মিক্সড সবজি টি বাচ্চাদের জন্য খুবই উপকারী। বাচ্চাকে সলিদ খাবার দেওয়া শুরুর পর থেকেই আপনি এই খিচুড়ি খাওয়াতে পারবেন। ডাল এ রয়েছে প্রোটিন এছাড়া শাক ও সবজি তে পাবেন বিভিন্ন ভিটামিন যা শিশুর পুষ্টির চাহিদা মেটাতে সাহায্য করবে। তবে প্রথমেই বাচ্চার খাবারে মরিচ , লবণ অথবা তেল ব্যবহার করার প্রয়োজন নেই। প্রথম অবস্থায় খিচুড়ি রান্নার সময় খুব বেশি সবজি বা ডাল এক সাথে ব্যবহার করবেন না। বরং একটি বা দুইটি ডাল দিয়ে রান্না করে বাচ্চাকে খাওয়াবেন। যদি বাচ্চা খেতে পছন্দ করে বা সেই খাবারে বাচ্চার কোণোরুপ সমস্যা দেখা না যায় তাহলে ধীরে ধীরে আরও কিছু সবজি এড করতে পারেন।
ঝপটপ ডিম দিয়ে মজাদার স্ন্যাকস রেসিপি

স্ন্যাকস ( snack) শব্দের অর্থ হলো জলখাবার। সাধারণত সকাল বা দুপুরের ভাড়ি খাবারের পর আমরা হালকা নাস্তা হিসেবে বিকেলে বা সন্ধ্যায় কিছু খাবার খেয়ে থাকি। এটিই স্ন্যাকস নামে পরিচিত। স্ন্যাকস হিসেবে আমাদের সকলের পছন্দ হালকা ও সহজেই তৈরি করা যায় এমন কিছু খাবার। ডিমের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে তো আমাদের সকলের জানা। যা আমাদের শরীরের বিভিন্ন পুষ্টিচাহিদা মিটেয়ে থাকে। রোজ রোজ ডিম সিদ্ধ বা পোচ খেতে খেতে অনেক সময় একঘেয়েমি চলে। এছাড়াও অনেক বাচ্চারা একেবারেই ডিম খেতে চায়না। সেক্ষেত্রে বাসায় তৈরি করে ফেলতে পারেন ডিম দিয়ে মজাদার স্ন্যাকস। এতে পুষ্টির চাহিদার পূরণের পাশাপাশি স্বাদের ভিন্নতা আনবে। আজকের এই আর্টিকেল থেকেই আপনি বেশ কিছু মজাদার রেসিপি শিখতে পারবেন। ডিম দিয়ে মজাদার স্ন্যাকস বাঙালি ভোজন রসিক। প্রতিদিনের খাবারের পাশাপাশি স্ন্যাকস না খেলে যেনো চলেই না। এছাড়াও কোন আইটেম তৈরি করা হবে তা নিয়ে কিছুটা দুশ্চিন্তায় পোহাতে হয়। সহজ একটি সমাধান হলো ডিম। প্রত্যেকের রান্নাঘরের খুব পরিচিত ডিম দিয়ে মজাদার স্ন্যাকস ঝটপট তৈরি করে ফেলা যায়। চলুন মজাদার কিছু রেসিপি জেনে নেওয়া যাক- ডিমের পাকোড়া উপকরণ প্রস্তুতপ্রনালি প্রথমে ডিম গুলোকে পছন্দ মতো শেপে কেটে নিতে হবে। এরপর একটি বাটিতে বেসন, লবন, মরিচ ও পানি দিয়ে একটু ঘন ব্যাটার তৈরি করে নিতে হবে। এরপর সিদ্ধ ডিমে টুকরা গুলোকে ব্যাটারে ডুবিয়ে ভালো করে গরম তেলে ভেজে নিতে হবে। ডিমের কালার কিছুটা লালচে হয়ে এলে নামিয়ে ফেলুন এবং টমেটো সসের সাথে পরিবেশন করুন। ডিম পরোটা রোল উপকরণ প্রস্তুতপ্রনালী প্রথমে একটি ডিমের সাথে লবন মরিচ, পেঁয়াজ, ধনিয়াপাতা ও টমেটো কুচি ভালো করে মিশিয়ে নিতে হবে। এরপর একটি ফ্রাইপেনে সামান্য তেল গরম করে নিয়ে পরোটা ভেজে নিন এবং পরোটার একপাশ রেডি হয়ে এলে এতে ডিমের মিশ্রন ঢেলে দিন। এরপর দুইপাশ থেকে ভালো করে ভেজে নিন এবং চামচের সাহায্য রোলের মতো করে ভেজে পরিবেশন করুন। ডিম ও আলুর কাটলেট উপকরণ প্রস্তুতপ্রনালি প্রথমে আলু ও ডিম গুলোকে খুব সুন্দর ভাবে ম্যাশ করে নিতে হবে। এরপর এতে লবন ও মরিচ গুড়া মিশিয়ে ভালো করে মেখে নিতে হবে এবং হাতের সাহায্য গোলাকৃতি করে কাটলেটের শেপ তৈরি করে নিতে হবে এর পর ব্রেডক্রাম্বে গড়িয়ে গরম তেলে ব্রাউন করে ভেজে নিন। সালাদ অথবা সসের সাথে খেতে এটি বেশ মজার। ডিমের নাগেটস রেসিপি উপকরণ প্রস্তুতপ্রনালি প্রথমে একটি পাত্রে ডিম, আলু গাজর ও বাকি মশলা গুলোকে খুব ভালো করে মিক্সড করে নিতে হবে। এরপর অন্য আরেকটি স্টিল বা কাচের পাত্রে সামান্য তেল ব্রাশ করে নিতে হবে এবং ডিমের মিশ্রন টা ঢেলে দিতে হবে। এরপর চুলায় একটি পাতিলে পানি গরমে দিয়ে এটির উপরে স্ট্যান্ড বসাতে হবে ও পাত্র সহ ডিমের মিশ্রন টাকে ২০-৩০ মিনিটের জন্য ভাবে রাখতে হবে। ঠিক যেভাবে আমরা পুডিং বানিয়ে থাকি। এরপর ৩০ মিনিট রাখার পরে দেখবেন খুব সুন্দর ভাবে আলু ও গাজর সিদ্ধ হয়ে সুন্দর একটি শেপে পরিনত হয়েছে। এরপর সেটি একটি ছুরির সাহায্য ডিমের মিশ্রন টাকে সুন্দর ভাবে নাগেটস শেপে কেটে নিতে হবে। এরপর আলাদা একটি পাত্রে কিছুটা ময়দা এর সাথে পানি মিশিয়ে একটু পাতলা ব্যাটার তৈরি করে নিতে হবে। এরর নাগেট গুলোকে সেই ময়দাতে মিশিয়ে নিতে হবে এবং ব্রেক্ক্র্যাম্পস এ ভালো ভাবে মিশিয়ে নিতে হবে। এরপর নাগেট গুলোকে ভালো ভাবে গরম তেলে ডিপ ফ্রাই করে নিতে হবে। ব্যাস তৈরি হয়ে গেলো মজাদার ডিমের নাগেটস। ডিম আলুর চিজ বল উপকরন প্রস্তুতপ্রনালি প্রথমে ২টি সিদ্ধ ডিম ও আলুকে একটু গ্রেটার এর সাহায্য ভালো করে গ্রেট করে নিতে হবে। এরপর এতে পেয়াজ ও মরিচ কুচি সহ সকল মশলা ও কিছুটা ব্রেড ক্রাম্পস মিশীয়ে খুব ভালো করে মেখে নিতে হবে। এরপ হাতের সাহায্য গোল শেপ তৈরি করে নিতে হবে এই এর মাঝে কিছুটা চিজ এড করে নিতে হবে। এরপর আলাদা আরেকটি পাত্রে ৩টি ডিম গুলিয়ে নিতে হবে। এরপর সেই ডিম ও আলুর বল গুলোকে প্রথমে একবার চালের গুড়া তে কোট করে নিতে হবে। এরপর ডিমে কিছুক্ষন কোট করে সর্বশেষ ব্রেডক্রাম্পে মিশিয়ে ভালো করে গরম তেলে ভেজে নিতে হবে। লালচে হয়ে এলেই রেডি মজাদা ডিম ও আলুর চিজ বল। ডিমের স্যান্ডউইচ রেসিপি উপকরন প্রস্তুতপ্রনালি প্রথমে একটি পাত্রে সেদ্ধ ডিম গুলোকে খুব ভালো ভাবে মিক্সড করে নিতে হবে। এরপরে এতে মেয়োনিজ, গোল মরিচ গুড়া ও লবন মিশিয়ে নিতে হবে। এরপ্রে পাউরুটি তে মাখিয়ে নিলেই রেডি মজাদার এগ স্যান্ডউইচ। এরপরে পছন্দ মতো শেপে কেটে নিতে পারেন অথবা আস্ত ই খেতে পারবেন। ডিমের প্যানকেক উপকরন প্রস্তুতপ্রনালি প্রথমে একটি পাত্রে ডিম, চিনি ও সামান্য লবন খুব ভালো ভাবে ফেটিয়ে নিতে হবে। এরপর এতে তেল দিয়ে আবারো মিক্সড করতে হবে। এরপর একে একে ময়দা, আটা, বেকিং পাউডার , ও ভ্যানিলা এসেন্স দিয়ে মিক্সড করতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে যেনো কোণো ময়দা বা আটার দলা না পাকে এবং খুব মিহি মিশ্রন তৈরি হয়। এরপর একটি ফ্রাইপ্যানে কিছুটা তেল ব্রাশ করে নিতে হবে। এবার একটি চামচের সাহায্য রেডি করে রাখা ব্যাটার গুলো অল্প অল্প করে দিটে চুলার আচ হালকা রাখতে হবে। কিছুটা লাল হয়ে এলে অপর পাশ ও একই ভাবে রান্না করে নিবেন। ব্যাস রেডী মজাদার ডিমের প্যানকেক। প্যানকেক এর উপরে কিছু মিষ্টি সিরাপ বা মধু মিশিয়ে খেতে পারেন। চাইলে ঝাল কোনো তরকারির সাথেও খেতে পারবেন। ডিম আলুর মুচমুচে পাকোড়া উপকরন প্রস্তুতপ্রনালি প্রথমে একটি পাত্রে কুচি করে কেটে রাখা আলু গুলোর সাথে পেয়াজ, মরিচ , লবন ও অনান্য মশলা সহ ভালো করে মাখিয়ে নিতে হবে । এরপর এতে এড করতে হবে সামান্য চালের গুড়া। তারপর হাতের সাহায্যে সুন্দর শেপে তৈরি করে নিয়ে গরম তেলে ভেজে পরিবেশন করতে হবে। উপসংহার বিকেলের নাস্তায় ডিম দিয়ে এমন আরও অনেক মজাদার রেসিপি তৈরি করা সম্ভব। আজকের এই আর্টিকেলে আমি সহযে ও কম সময়ে তৈরি করা যায় এমন কিছু রেসিপি আপনাদের সাথে শেয়ার করেছি। আশা করছি এখন থেকে বিকেলের নাস্তা নিয়ে আর বাড়তি টেনশনের কারন নেই বরং বিকেলের নাস্তার পাশাপাশি মেহমান আপ্পায়নেও আপনারা ডিমের তৈরি এই অসাধারন রেসিপি গুলো বানাতে পারবেন।
পবিত্র রমজানে সুস্থ থাকতে ইফতার-সেহরিতে যা খাবেন, যা খাবেন না

পবিত্র মাহে রমজান মাস- মুসলিমদের জন্য এ যেনো এক রহমতের মাস। এই মাস আমাদের জীবনে পরিবর্তন নিয়ে আসে। সিয়াম সাধনার মাসে নিজেকে ও পরিবারের সদস্যদের সুস্থ রাখতে ইফতার ও সেহরিতের খাবারের প্রতি বিশেষ নজর রাখা জরুরী। আমাদের সামর্থ্য অনুযায়ী ইফতার ও সেহরিতে খাবারের নানান পদের আয়োজন করে থাকি। লক্ষ্য করলে দেখা যাবে আমাদের দেশে ইফতারের সময়টাতে মুখোরচক ভাজাপোড়া আইটেমগুলোর প্রচলণ বেশি। এই ধরনের খাবারগুলো মোটেও স্বাস্থ্যসম্মত নয়। অন্যদিকে স্বাস্থ্যসম্মত ব্যাক্তিরা খাবারের বিষয়ে বেশ সচেতন থাকেন। তারা ইফতার ও সেহরিতে পুষ্টিসমৃদ্ধ খাবার রাখার চেষ্টা করেন। আজকের আর্টিকেলের মাধ্যমে আমরা ইফতার-সেহরিতে যেসকল খাবার রাখবো ও যেসকল খাবার এড়িয়ে চলবো সেটা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবো। ইফতারে যা খাবেন রোজার মাসে অনেকের কাছে ইফতারের ম্যনুতে তেলে ভাজা খাবার ছাড়া যেনো চলেই না। তবে রোজা রেখে সুস্থ রাখতে চাইলে আমাদেরকে অবশ্যই ইফতার ও সেহরির খাবারের ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। যতটা সম্ভব পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে। এবং ভাজাপোড়া খাবারগুলো এড়িয়ে চলতে হবে। সঠিক খাদ্যাভাস মেনে চললে আমরা সুস্থ থাকতে পারবো। অন্যথায় শরীর দুর্বল ও অসুস্থ হয়ে পরার সম্ভাবনা থাকে। চলুন জেনে নেওয়া যাক ইফতারের সময়ে কোন খাবারগুলো খাওয়া উচিত- খেজুর খেজুরের বহুগুণ উপকারিতা রয়েছে। এছাড়াও এটি দিয়ে ইফতার করা সুন্নত। এতে রয়েছে প্রাকৃতিক চিনি। যা আমাদের শরীরে তাৎক্ষণিত শক্তি জোগাতে সাহায্য করে। হজমেও বেশ সহায়ক ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই ইফতারের সময়ে আমাদের খেজুর খাওয়া উচিত। শরবত সারাদিন রোজা রাখার পরে একগ্লাস শরবত আমাদের ক্লান্তি দূর করতে সাহায্য করে। শুধু তাই নয়, আমাদের শরীরের পানির অভাব পূরণ করে থাকে শরীরকে হাইড্রেটেড রাখতে সহায়ক। তাই ইফতারে পানি ও শরবত রাখার চেষ্টা করতে হবে। শরবত বিভিন্ন উপাদান দিয়ে তৈরি করে নেওয়া যায়। যেমন- লেবুর শরবতের পাশাপাশি ,ইসবগুলের ভূসি, সিয়াসিড, তেঁতুল, বেল, দই ও ফলের রস ইত্যাদি দিয়ে নিজেদের পছন্দ ও স্বাদের ওপর নির্ভর করে বাসায় শরবত বানিয়ে ফেলতে পারেন। পানি আমরা সারাদিন রোজা রাখি। ফলে শরীরে পানির ঘাটতি তৈরি হয়। আর এই ঘাটতি পূরণ করতে অবশ্যই পর্যাপ্ত পরিমাণে পান করতে হবে। তবে ইফরাতে একবারে অতিরিক্ত পানি পান করা অনুচিত। এতে নাড়িতে প্যাঁচ লেগে অসুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা রয়ে যায়। তাই ইফতারের সময় থেকে সেহরি পর্যন্ত ২-৩ লিটার পানি খাওয়া উচিত। ফলে আমাদের শরীরকে হাইড্রেটেড রাখবে ও হজমে সাহায্য করবে। তাজা ফলমূল ইফতারিতে তাজা ফলমূল খাওয়া উচিত। কারণ তাজা ফলমূলে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ও মিনারেল থাকে। যা আমাদের শরীরের প্রয়োজনীয় পুষ্টি সরবরাহ করে থাকে। বাজারে কলা বেশ সহজলভ্য হলেও শরীর, মস্তিষ্ক ও স্নায়ুকোষ খাবারের মাধ্যমে তাৎক্ষণিক শক্তির যে জোগান চায়, কলা সেটি পূরণ করতে পারে। ইফতারে কলা বেশ ভালো একটি ফল হতে পারে। এছাড়াও পেপে, তরমুজ, পেয়ারা, আপেল, কমলা, আনারস ইত্যাদি ফলগুলো রাখা যেতে পারে। স্বাস্থ্যকর শর্করাজাতীয় খাবার রোজা রাখার কারণে আমাদের শরীর কিছুটা দুর্বল হয়ে পরে। তাই ইফতারে স্বাস্থ্যসম্মত শর্করা রাখা যেতে পারে। যেমন লাল চালের ভাত, গমের রুটি, ওটস, চিড়া, মিষ্টি আালু ইত্যাদি। এসমস্ত খাবার আমাদের শরীরে শক্তি জোগাতে সাহায্য করে। ইফতারিতে যা খাবেন না ভাজাপোড়া খাবার ইফতারির মেন্যুতে পেঁয়াজু, বেগুনি, পুরি ইত্যাদি ভাজাপোড়া খাবার খুবই কমন। অনেকের কাছে এসকল ভাজাপোড়া খাবার না হলে যেনো চলেই না। তবে সারাদিন রোজা রেখে তৈলাক্তযুক্ত খাবার খাওয়া আমাদের স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর। অতিরিক্ত ভাজাপোড়া খাবার খেলে হজমে সমস্যা দেখা দেয়। এছাড়াও গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হতে বুক জ্বালাপোড়া করে। তাই আমাদের উচিত যতটা সম্ভব ইফরাতে ভাজাপোড়া জাতীয় আইটেমগুলো এড়িয়ে চলা। অতিরিক্ত মিষ্টি জাতীয় খাবার ইফতারিতে কখনোই অতিরিক্ত মিষ্টি জাতীয় খাবার বেশি পরিমাণে খাবেন না। আমরা সকলেই জানি চিনি শরীরের জন্য কতটা ক্ষতিকর। যা খাওয়ার ফলে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয় এমনকি ওজন বৃদ্ধি করে ফেলে। ক্যাফেইনযুক্ত পানীয় চা কিংবা কফি প্রিয়মানুষদের সারাদিনে একবার চা কফি ছাড়া যেনো চলেই না। সাধারণত রোজার মধ্যে ইফতারির সময়টি অনেকেই চা-কফি পান করে থাকেন। যা মোটেও স্বাস্থ্যসম্মত নয়। কারণ ক্যাফেইনপুক্ত পানীয় আমাদের শরীরকে পানি শূন্য করে ফেলে। সারাদিনের রোজা রাখার ফলে শরীরে পানির ঘাটতি তৈরি হয়। এরপরে চা কফি খেলে শরীরকে আরও ডিহাইড্রেটেড করে তুলবে। তাই যতটা সম্ভব ইফতারিতে ক্যাফেইনযুক্ত পানীয় এড়িয় চলা উচিত। অতিরিক্ত মসলাযুক্ত ও ভারি খাবার ইফতারে কখনোও অতিরিক্ত খাবার গ্রহণ করা উচিত নয়। সারাদিন রোজা রাখার ফলে আমাদের পাকস্থলী সংকুচিত হয়ে যায়। ইফতারে ভারি ও অতিরিক্ত খাবার খেলে পাকস্থলীতে চাপ পড়ে। ফলে আমরা অস্বস্তিতে ভুগতে থাকি। তাই যতটা সম্ভব হালকা ও পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে। সাহরিতে যা খাবেন সাহরিতে সহজপাচ্য ও স্বাস্থ্যসম্মত খাবার খাওয়া উচিত। যা আমাদের সুস্থ রাখতে সাহায্য করবে। খাদ্যতালিকায় সাহরিতে যেসকল রাখা উচিত চলুন জেনে নেওয়া যাক – আঁশ জাতীয় খাবার গ্রহণ আমাদের শরীরের চাহিদা ও সামর্থ্য অনুযায়ী আঁশজাতীয় খাবার গ্রহণ করা উচিত। যা খাওয়ার ফলে আমাদের দেহের প্রয়োজনীয় শক্তি জোগান দেয়। ধীরে হজম হওয়ার কারণে ক্ষুধা অনুভব কম হয়। ফলে রোজার সময় সারাদিন সুস্থ ও কর্মক্ষম রাখতে সাহায্য করবে। আঁশযুক্ত খাবারের মধ্যে ভাত, লাল আটা, বাদাম, বিনস, ছোলা, ডাল ইত্যাদি খেতে পারেন। সুবজ শাকসবজি শাকসবজির উপকারিতা সম্পর্কে আমাদের সকলেরই জানা রয়েছে। সাহরিতে সবুজ শাকসবজি রাখা যেতে পারে। সবজির হিসেবে লাউ, চালকুমড়ো, চিচিঙ্গা, ঢেরস, পটল প্রভৃতি। ও সবুজ শাক হিসেবে পুঁইশাক, কচুর শাক, লাউ শাক ইত্যাদি। এগুলো আমাদের শরীরে প্রয়োজনীয় শক্তি সরবরাহ করে থাকে। এছাড়াও হজম শক্তি বাড়িয়ে তোলে। যারা কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যায় ভুগছেন তারা বেশি বেশি সবুজ শাকসবজি খাবেন। প্রোটিন জাতীয় খাবার আমিষ কিংবা প্রোটিনের চাহিদা পূরণ করতে সাহরিতে দুধ, ডিম, মাছ মাংস রাখা যেতে পারে। এ ধরনের খাবারে ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, জিংক আয়রন ইত্যাদি পুষ্টি উপাদান রয়েছে। যা আমাদের দেহের ক্ষয়পূরনেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাই যতটা সম্ভব আমিষ জাতীয় খাবার গ্রহণ করা। সাহরিতে যা খাবেন না চা-কফি সাহরিতে কখনোই চা-কফি পান করা উচিত না। কারণ এতে বিদ্যমান ক্যাফেইন তৃষ্ণার সৃষ্টি করে ও শরীরকে পানিশূন্য করে। ফলে রোজার দিনগুলোতে অনেক বেশি পানি পিপাসা অনুভূত হতে পারে। শুধু তাই নয়, ক্যাফেইনযুক্ত পানীয় খাদ্যের পুষ্টি পরিশোষণে বাধা দেয়। অতিরিক্ত তেল ও মসলাযুক্ত খাবার সাহরিতে মসলা ও তেলযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলা উচিত। যেমন তেহারি, বিরিয়ানি ইত্যাদি। এই ধরনের খাবার হজম হতে অনেক সময় লাগে ও হজম করতে দেহে প্রচুর পানি পরিশোষিত হয়। পরবর্তীতে আমাদেরকে আরও তৃষ্ণার্ত করে তোলে। এছাড়াও পেটে গ্যসের সমস্যা দেয়া দিতে পারে। অতিরিক্ত মিষ্টি জাতীয় খাবার সাহরিতে মিষ্টি জাতীয় খাবার না খাওয়ায় উত্তম। কারণ মিষ্টি জাতীয় খাবারগুলো আমাদের ক্ষুধা বাড়িয়ে দেয়। ফলে দিনের বেলাতে ক্ষুধা অনুভব করে থাকি। ফলে শরীরে ক্লান্তি চলে আসে। উপসংহার রমজান মাসে আমাদের দেশে মানুষের মধ্যে যে খাদ্যাভ্যাস লক্ষ করা যায় তা মোটেও স্বাস্থ্যসম্মত নয়। ইফতারি কিংবা সাহরিতে আমরা তেলে ভাজা ও উচ্চ চর্বিসমৃদ্ধ খাবার খেয়ে থাকি। এই ধরনের খাবারগুলো হজম হতে বেশ সময় লাগে। শরীরে তাপ সৃষ্টি হয়। ফলে একধরনের অসস্তি অনুভব করে থাকি। অনেক সময় বদহজমের মতো সমস্যা দেখা দেয়। তাই
খুব সহজেই কিছু মজার নিরামিষ রান্নার রেসিপি

বর্তমান সময়ে অনেকেই স্বাস্থ্যসচেতন ব্যক্তি হিসেবে নিরামিষ খাবারকে বেশি পছন্দ করছেন। তবে নিরামিষ খাবার স্বাস্থ্যকর হওয়ার পাশাপাশি বেশ সুস্বাদু ও হয়ে থাকে। বিশেষ করে বিভিন্ন শাকসবজি,ডাল ও মশলায় তৈরি নিরামিষ খাবার আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী। তবে নিরামিষ খাবারের সঠিক স্বাদ পাওয়ার জন্য সঠিক উপকরণ ও রান্নার সঠিক কৌশল জানাটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। আজকের এই ব্লগে আমরা জানবো খুব সহজে আপনি কীভাবে বাসায় মজার সব নিরামিষ তরকারি রান্না করতে পারবেন। বিভিন্ন নিরামিষ তরকারির রেসিপি পালং শাক ও পনিরের তরকারি শীতকালে খুবই পরিচিত একটি শাক হলো পালংশাক। বিভিন্ন ভিটামিন ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর এই শাক আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী। তবে নিরামিস হিসেবে এই শাক রান্না করলেও এর স্বাদ কিন্তু চমৎকার। উপকরণ প্রস্তুতপ্রণালি প্রথমে একটি ফাইপ্যানে তেল গরম করে নিতে হবে। এরপর এতে আস্ত পনির গুলো কিছুটা কিউব করে কেটে ভেজে নিতে হবে। ভাজা পনির গুলো ভেজে আলাদা ভাবে তুলে রাখুন। এরপর সেই প্যানে পেঁয়াজ ও রসুন কুচি দিয়ে কিছুটা লাল করে ভেজে নিন। ভাজা শেষে এতে টমেটো কুচি দিয়ে নাড়ুন। টমেটো কিছুটা নরম হয়ে এলে পালং শাক দিয়ে এতে সামান্য লবণ ও হলুদ গুড়া মিশিয়ে ঢেকে দিন। পালং শাক সিদ্ধ হয়ে এলে এতে ভেজে রাখা পনির ও বাকি মশলা গুলো ব্যবহার করুন। এরপর আবারো মিডিয়াম আঁচে ৫ মিনিট রান্না করলেই রেডি মজাদার পালং পনির। মিক্সড সবজি বিভিন্ন সবজি ও মশলার মিশ্রণে রান্না করে সবজি খেতে যেমন দারুণ সেই সাথে এটি বেশ স্বাস্থ্যকর। শীতকাল মানেই বাজারে বিভিন্ন সবজির সমারোহ। শাকসবজির উপকারিতা বলে শেষ কঠিন। তাই আপনারা চাইলে এই সময় বাসায় বসে মজাদার এই মিক্সড সবজি টি বানিয়ে রাখতে পারেন। ভাতের পাশাপাশি রুটি ও পরোটার সাথেও এই সবজি খেতে বেশ মজার। উপকরণ প্রস্তুতপ্রনালি প্রথমে একটি ফ্রাই প্যানে তেল গরম করে নিন। এরপর এতে আস্ত জিরা ও পেঁয়াজ দিয়ে হালকা করে ভেজে নিন। ভাজা শেষে আদা ও জিরা বাটা দিন। এরপর এতে কুচি করে রাখা টমেটো দিয়ে ভালো করে রান্না করে নিন। টমেটো গুলো যখন নরম হয়ে আসবে তখন এতে হলুদ গুঁড়া, জিরা গুড়া, লবণ, ও গরম মশলা মিশিয়ে ভালো করে মশলা গুলো কষিয়ে নিন। কষানো শেষে এতে ছোট করে কেটে রাখা সবজি গুলো দিয়ে ভালো করে চামচের সাহায্য মিশিয়ে নিন। তারপর কিছুটা পানি ব্যবহার করুন ও মাঝারি আচে রান্না করুন। এরপর সবজি সিদ্ধ হয়ে এলেই রেডি আপনার মিক্সড সবজি। এই অবস্থায় স্বাদ বৃদ্ধির জন্য উপর থেকে কিছুটা পেঁয়াজ বেরেস্তা ছিটিয়ে দিতে পারেন। কাচা কাঁঠালের কোফতা কারি কাঁচা কাঁঠাল হলো আমিষ ও ভিটামিনে ভরপুর একটি খাবার। আমরা অনেকেই কাচা কাঁঠাল সিদ্ধ করে অথবা সাধারণত সবজির মতো রান্না করে খেয়ে থাকি। তবে আজ একটু ভিন্ন ধর্মী রান্না শেয়ার করবো আপনাদের সাথে। উপকরণ প্রস্তুতপ্রনালি প্রথমে কাচা কাঁঠাল ও আলু ভালো করে সিদ্ধ করে নিতে হবে। এরপর সেগুলো ভর্তার মতো করে একসাথে মিশিয়ে নিতে হবে। এরপর এর মাঝে লবণ, ময়দা, চালের গুড়া, বেসন, ও লবণ মিশিয়ে মেখে নিতে হবে। তারপর আপনি চাইলে আপনার পছন্দ মতো যেকোনো শেপে এটি বানাতে পারেন। চাইলে গোল রাখতে পারেন অথবা মাছের আকৃতিতে বানাতে পারেন অথবা চাইলে কিউব ও বানাতে পারেন। এরপর আমাদের কারি তৈরি করতে হবে। এরজন্য একটি ফ্রাইপেনে তেল গরম করে এতে আস্ত জিরা, পেঁয়াজ, রসুন ও আদা বাটা মিশিয়ে নিতে হবে। এরপর এতে একে একে সব মশলা এড করে ভালো করে কষিয়ে রান্না করে নিতে হবে। কোফতা গুলো সিদ্ধ হওয়ার জন্য পরিমাণ মতো পানি দিয়ে মশলা গুলো আরও কিছুক্ষণ জ্বাল করে নিবেন। এরপর এতে আগে থেকে বানিয়ে রাখা কাঁঠালের কোফতা দিয়ে কিছুক্ষণ মিডিয়াম আচে রান্না করে নিন। রান্না শেষে এতে সামান্য ঘি ও গরম মসলা ছিটিয়ে দিন। বেশ ভালো একটা ঘ্রাণ পাবেন এতে। আলুর দম আলুর দম বেশ প্রাচীন ও মজার একটি খাবার। ভাত, খিচুড়ি অথবা লুচি , পরোটার সাথে এটির কম্বিনেশন বেশ দারুণ। খুব সহজেই আপনি নিরামিষ আলুর দম বানিয়ে নিতে পারেন। উপকরণ প্রস্তুতপ্রনালী প্রথমে একটি পাত্রের মাঝে আলু গুলো কিছুটা মাঝারি সাইজের কিউব করে কেটে নিন। এরপর এর সাথে পেঁয়াজ কুচি, সামান্য আদা রসুন বাটা, ও অন্যান্য মশলা এবং তেল মিশিয়ে ভালো করে আলুর সাথে মেখে নিন। এরপর এতে সামান্য পানি মিশিয়ে সিদ্ধ হওয়ার জন্য চুলায় বসিয়ে দিন। দিন খুব অল্প পরিমাণে দিবেন যাতে সিদ্ধ হয় এবং এক্সট্রা পানি না থাকে। এরপর আলু গুলো সিদ্ধ হয়ে এলে এটি নামিয়ে ফেলুন। এবার আলাদা একটি প্যানে তেল গরম করুন ও এতে কিছুটা পেঁয়াজ কুচি দিয়ে ভাজতে থাকুন। ভাজা শেষে এতে টমেটো কুচি দিয়ে রান্না করতে থাকুন। টমেটো নরম হয়ে এলে এতে সিদ্ধ করে রাখা আলু গুলো দিয়ে ভালো করে নাড়তে থাকুন। একটু মাখোমাখো ভাব হয়ে এলে এতে সামান্য পেঁয়াজ বেরেস্তা ও জিরা গুড়া মিশিয়ে চুলা থেকে নামিয়ে পরিবেশন করুন। ছোলার ডাল দিয়ে লাউ রান্না উপকরণ প্রস্তুতপ্রনলী প্রথমে একটি পাত্রে তেল গরম করে নিতে হবে।এরপর পেঁয়াজ গুলো হালকা ভেজে নিয়ে এতে আদা ও রসুন বাটা সহ সব মশলা মিশিয়ে ভালোভাবে কষিয়ে রান্না করে নিতে হবে। মশলা কষানো শেষে এতে লাউ ও ছোলার ডাল মিশিয়ে নিন। এবার পানি দিয়ে ঢেলে মিডিয়াম আচে কিছুক্ষণ রান্না করুন। রান্না শেষে সামান্য জিরার গুঁড়া ছিটিয়ে নিন। ব্যাস রেডি মজাদার ছোলা ও লাউ এর তরকারি। নিরামিষ মুগ ডাল উপকরণ প্রস্তুতপ্রনালী প্রথমে একটি পাত্রে মুগ ডাল হালকা আচে ভেজে নিন। এরপর অন্য আরেকটি প্যানে তেল গরম করে এতে আস্ত জিরা, পেঁয়াজ ও শুকনা মরিচ ভেজে নিন। এবার আদা বাটা, টমেটো মিশিয়ে বাকি মশলা গুলো ভালো করে কষিয়ে নিন। এরপর এতে এড করুন ভেজে রাখা মুগ ডাল। ডাল কিছুটা সিদ্ধ হয়ে এলে মটরশুঁটি দিয়ে রান্না করুন।সবশেষ রান্না শেষে ভাজা জিরা গুড়া মিশিয়ে নিন। উপসংহার নিরামিষ খাবারের রেসিপি গুলো যতটা সুস্বাদু ঠিক ততোটাই পুষ্টিকর। আপনি যদি সঠিক রেসিপি ফলো করে রান্না করতে পারেন তাহলে খাবার গুলো অনেক বেশী আকর্ষণীয় হয়ে উঠবে। আজকের এই ব্লগে সহজে রান্না করা যায় এমন বেশ কিছু নিরামিষ রান্নার রেসিপি শেয়ার করেছি। আশা করছি এই নিরামিষ রান্নার রেসিপি গুলো আপনাদের বেশ পছন্দ হয়েছে। তাই খুব সহজে বাসায় এই রেসিপি গুলো তৈরি করুন ও পরিবারের সকলের মন জয় করুন।